অনপেজ এসইও কি? কিভাবে করবেন – সহজ বাংলা গাইড (২০২৫)

বর্তমান সময়ে অনলাইন মার্কেটিংয়ে সফল হতে হলে SEO সম্পর্কে পরিষ্কার ধারণা থাকা জরুরি। SEO-এর দুটি বড় ধরণের একটি হলো অনপেজ এসইও (On-Page SEO)। আপনি যদি একটি ওয়েবসাইট বা ব্লগ চালান এবং গুগলে ভালোভাবে র‍্যাংক করতে চান, তাহলে অনপেজ এসইও শেখা অপরিহার্য। আজকের এই গাইডে আমরা শিখব, অনপেজ এসইও কি এবং কীভাবে এটি করবেন সহজভাবে। 

সূচিপত্র

অনপেজ এসইও কি?

অনপেজ এসইও হলো সেই প্রক্রিয়া, যেখানে আপনি আপনার ওয়েবসাইট বা নির্দিষ্ট পেজকে গুগল এবং পাঠকের জন্য উপযোগী করে তোলেন। এতে ওয়েবপেজের কনটেন্ট, HTML স্ট্রাকচার, হেডিং, কিওয়ার্ড, ইউআরএল, ইমেজ ইত্যাদি বিষয়কে অপটিমাইজ করা হয়।

সহজভাবে বললে:
যেসব কাজ আপনি নিজেই নিজের ওয়েবসাইটের ভেতরে করতে পারেন SEO-এর উন্নতির জন্য, তাই অনপেজ এসইও।

অনপেজ এসইও কেন গুরুত্বপূর্ণ?

এটি গুগলকে বলে দেয়, আপনার কনটেন্ট কী নিয়ে।

ভিজিটরদের জন্য কনটেন্ট আরও পাঠযোগ্য হয়।

সার্চ ইঞ্জিনে র‍্যাংক বাড়ে।

CTR (Click Through Rate) বৃদ্ধি পায়।

ওয়েবসাইটের ট্রাফিক ও কনভার্সন বাড়ে।

অনপেজ এসইও এর উপাদান সমূহ নিচে বিস্তারিত ভাবে আলোচনা করা হলো।

টার্গেট কিওয়ার্ড রিসার্চ:

অনপেজ SEO-এর অন্যতম প্রধান উপাদান হলো টার্গেট কিওয়ার্ড রিসার্চ। এটি এমন একটি প্রক্রিয়া যার মাধ্যমে আপনি নির্ধারণ করেন কোন শব্দ বা বাক্যাংশগুলো আপনার সম্ভাব্য দর্শক বা গ্রাহক সার্চ ইঞ্জিনে খুঁজে দেখছে, এবং সেই অনুযায়ী আপনি কনটেন্ট তৈরি করেন। এটি সঠিকভাবে না করলে আপনার কনটেন্ট যত ভালোই হোক, তা গুগলে র‍্যাঙ্ক করবে না বা টার্গেট দর্শকের কাছে পৌঁছাবে না।

কীওয়ার্ড রিসার্চ কী?

টার্গেট কিওয়ার্ড রিসার্চ বলতে বোঝায় এমন কীওয়ার্ড বা শব্দগুচ্ছ খোঁজা যেগুলো ব্যবহারকারীরা গুগল বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করে। এই কীওয়ার্ডগুলো আপনার কনটেন্টের জন্য গাইডলাইন হিসেবে কাজ করে এবং আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়াতে সাহায্য করে।

কেন টার্গেট কিওয়ার্ড রিসার্চ জরুরি?

ট্রাফিক বৃদ্ধি: সঠিক কীওয়ার্ড ব্যবহার করলে সার্চ ইঞ্জিন থেকে বেশি ট্রাফিক পাওয়া যায়।

রাইট অডিয়েন্স টার্গেটিং: এমন দর্শকদের কাছে পৌঁছাতে সাহায্য করে যারা সত্যিই আপনার পণ্য বা কনটেন্টে আগ্রহী।

কনটেন্ট স্ট্রাকচারিং: কীওয়ার্ড রিসার্চের মাধ্যমে আপনি কনটেন্টের কাঠামো ও টপিক আইডিয়া ঠিক করতে পারেন।

র‍্যাঙ্কিং ইমপ্রুভমেন্ট: সঠিক কীওয়ার্ড ব্যবহারে গুগলে ভালো পজিশনে র‍্যাঙ্ক পাওয়া সহজ হয়।

কীভাবে টার্গেট কিওয়ার্ড রিসার্চ করবেন?

1. অডিয়েন্স চিনুন: আপনার টার্গেট দর্শক কারা এবং তারা কীভাবে সার্চ করে সেটা বুঝুন।

2. কীওয়ার্ড রিসার্চ টুল ব্যবহার করুন:

Google Keyword Planner

Ubersuggest

Ahrefs

SEMrush

AnswerThePublic

3. লো কম্পিটিশন, হাই সার্চ ভলিউম খোঁজ করুন: এমন কীওয়ার্ড বেছে নিন যার কম প্রতিযোগিতা রয়েছে কিন্তু সার্চ ভলিউম বেশি।

4. লং-টেইল কীওয়ার্ডে ফোকাস করুন: যেমন “ঢাকায় সাশ্রয়ী দামে SEO সার্ভিস” – এটি একটি নির্দিষ্ট এবং ইন্টারেস্টেড ইউজার টার্গেট করে।

5. প্রতিযোগী বিশ্লেষণ করুন: আপনার প্রতিদ্বন্দ্বীদের কোন কীওয়ার্ডে র‍্যাঙ্ক করছে সেটা দেখে অনুপ্রাণিত হতে পারেন।

কনটেন্টে কীভাবে কীওয়ার্ড ব্যবহার করবেন?

টাইটেল ট্যাগে

মেটা ডেসক্রিপশনে

URL-এ

প্রথম ১০০ শব্দের মধ্যে

সাবহেডিংয়ে (H2, H3)

ইমেজ ALT ট্যাগে

প্রাকৃতিকভাবে পুরো কনটেন্ট জুড়ে

টার্গেট কিওয়ার্ড রিসার্চ হচ্ছে SEO-এর ভিত্তি। এটি ছাড়া অনপেজ অপটিমাইজেশন অসম্পূর্ণ। তাই কনটেন্ট লেখার আগে সময় নিয়ে গভীরভাবে কীওয়ার্ড রিসার্চ করুন এবং তা কৌশলগতভাবে প্রয়োগ করুন।

আপনার ওয়েবসাইট যদি সার্চ রেজাল্টে উপরের দিকে দেখতে চান — তাহলে আজই শুরু করুন সঠিক টার্গেট কিওয়ার্ড রিসার্চ!

কনটেন্ট কোয়ালিটি

সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনে (SEO) কনটেন্ট হল রাজা—এ কথা নিশ্চয়ই বহুবার শুনেছেন। তবে কেবল মাত্র কনটেন্ট তৈরি করলেই চলবে না, সেই কনটেন্টের মান (Quality) হতে হবে সর্বোচ্চ পর্যায়ের। অন-পেজ SEO-তে কনটেন্ট কোয়ালিটি একটি মৌলিক উপাদান যা সার্চ র‍্যাংকিং, ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা এবং ওয়েবসাইটের অথরিটি বৃদ্ধিতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে।

কনটেন্ট কোয়ালিটি বলতে কী বোঝায়?

কনটেন্ট কোয়ালিটি বলতে বোঝানো হয় এমন কনটেন্ট যা:

ব্যবহারকারীর প্রশ্নের সন্তোষজনক উত্তর দেয়

ইউনিক, তথ্যবহুল এবং নির্ভরযোগ্য

সহজে পাঠযোগ্য এবং সুগঠিত

সার্চ ইঞ্জিনের জন্য অপ্টিমাইজড

কনটেন্ট কোয়ালিটির গুরুত্ব

১. ব্যবহারকারীর সন্তুষ্টি নিশ্চিত করে:

একজন পাঠক যখন আপনার ওয়েবসাইটে আসেন, তখন তার লক্ষ্য থাকে নির্দিষ্ট তথ্য খুঁজে পাওয়া। যদি আপনার কনটেন্ট সেই প্রয়োজন পূরণ করে, তাহলে সে দীর্ঘক্ষণ আপনার সাইটে থাকবে। এটি “ডুয়েল টাইম” বাড়ায় এবং সার্চ ইঞ্জিনে পজিটিভ সিগন্যাল পাঠায়।

২. বাউন্স রেট কমায়:

কম মানের বা বিভ্রান্তিকর কনটেন্ট হলে ব্যবহারকারী দ্রুত সাইট থেকে বের হয়ে যায়। অন্যদিকে উচ্চ মানের কনটেন্ট হলে সে পুরো লেখাটি পড়ে দেখে এবং সাইটের অন্য পেজেও যেতে পারে।

৩. ব্যাকলিংক অর্জনে সাহায্য করে:

যদি আপনার কনটেন্ট তথ্যসমৃদ্ধ এবং রেফারেন্সযোগ্য হয়, তাহলে অন্যান্য ওয়েবসাইট বা ব্লগাররা সেই কনটেন্টকে লিংক করবে। এটি অফ-পেজ SEO-তেও সহায়ক।

কীভাবে কনটেন্ট কোয়ালিটি নিশ্চিত করবেন?

১. ইউনিক ও অরিজিনাল কনটেন্ট লিখুন

কপি-পেস্ট বা স্পিন করা কনটেন্ট ব্যবহার করলে গুগল তা শনাক্ত করতে পারে এবং র‍্যাংকিং কমিয়ে দিতে পারে।

 ২. টপিকের গভীরে যান

শুধু সারফেস লেভেলের তথ্য নয়, চেষ্টা করুন পাঠককে টপিক সম্পর্কে গভীরভাবে বোঝাতে। উপ-শিরোনাম, উদাহরণ, চার্ট, স্ট্যাটিস্টিকস যোগ করুন।

৩. ইউজার ইন্টেন্ট বুঝুন

আপনার লক্ষ্য কী? কেউ যদি “SEO কী” সার্চ করে, সে কি গাইড খুঁজছে না সংজ্ঞা? তার চাহিদা বোঝার চেষ্টা করুন এবং সেই অনুসারে কনটেন্ট সাজান।

৪. সুবিন্যস্ত ফরম্যাট ব্যবহার করুন

হেডিং (H1, H2, H3), বুলেট পয়েন্ট, নম্বর লিস্ট, এবং ছোট প্যারাগ্রাফ ব্যবহার করে কনটেন্টকে স্ক্যানযোগ্য ও পাঠযোগ্য করুন।

৫. গ্রামার ও বানানে মনোযোগ দিন

ভুল বানান বা গঠনমূলক সমস্যা ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা নষ্ট করে এবং পেশাদারিত্বের ঘাটতি প্রকাশ করে।

৬. ইন্টারনাল ও এক্সটারনাল লিংক যুক্ত করুন

প্রাসঙ্গিকভাবে নিজের সাইটের অন্য পেজের লিংক (Internal Linking) এবং নির্ভরযোগ্য সোর্সের লিংক (External Linking) যুক্ত করুন।

 ৭. আপডেট রাখুন

পুরনো তথ্য সময়মতো আপডেট না করলে তা ভিজিটরের কাছে অপ্রাসঙ্গিক হয়ে পড়ে। নিয়মিত কনটেন্ট রিভিউ করুন।

অন-পেজ SEO-তে সফল হতে চাইলে কনটেন্ট কোয়ালিটির গুরুত্বকে কখনোই অবহেলা করা যাবে না। এটি কেবল সার্চ ইঞ্জিন নয়, পাঠকদের মন জয় করতেও অপরিহার্য। মনে রাখবেন, আজকের SEO হলো ব্যবহারকারীর জন্য তৈরি মানসম্মত কনটেন্ট—যা গুগলও ভালোবাসে।

 টাইটেল ট্যাগ (Title Tag): 

অন-পেজ SEO এর অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ একটি উপাদান হচ্ছে টাইটেল ট্যাগ (Title Tag)। এটি শুধু সার্চ ইঞ্জিন অপটিমাইজেশনের জন্যই নয়, বরং ব্যবহারকারীদের আকর্ষণ করতেও অত্যন্ত কার্যকর। আজকের এই আর্টিকেলে আমরা জানবো টাইটেল ট্যাগ কী, কেন এটি গুরুত্বপূর্ণ, এবং কীভাবে একটি ভালো টাইটেল ট্যাগ তৈরি করা যায়।

টাইটেল ট্যাগ কী?

টাইটেল ট্যাগ হচ্ছে HTML কোডের একটি অংশ যা একটি ওয়েব পেজের শিরোনাম নির্দেশ করে। এটি ব্রাউজারের ট্যাব, সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজ (SERP), এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে ওয়েবসাইটের শিরোনাম হিসেবে প্রদর্শিত হয়। উদাহরণস্বরূপ:

<title>বাংলাদেশে অনলাইন শিক্ষা: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ</title>

টাইটেল ট্যাগ কেন গুরুত্বপূর্ণ?

1. SEO র‍্যাংকিং: সার্চ ইঞ্জিন যেমন Google, Bing ইত্যাদি টাইটেল ট্যাগ ব্যবহার করে পেজের মূল বিষয়বস্তু বোঝে। এটি র‍্যাংকিং-এ প্রভাব ফেলে।

2. CTR (Click Through Rate) বৃদ্ধি: আকর্ষণীয় এবং প্রাসঙ্গিক টাইটেল ট্যাগ ব্যবহারকারীদের ক্লিক করার প্রবণতা বাড়ায়, ফলে ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বৃদ্ধি পায়।

3. ব্যবহারকারীর প্রাথমিক ধারণা: টাইটেল দেখে ব্যবহারকারী বুঝতে পারে পেজটি কী বিষয়ে।

একটি ভালো টাইটেল ট্যাগের বৈশিষ্ট্য

সুনির্দিষ্ট এবং প্রাসঙ্গিক: পেজের মূল বিষয়বস্তুর সঙ্গে সামঞ্জস্যপূর্ণ হতে হবে।

কীওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত: প্রাসঙ্গিক কীওয়ার্ড যুক্ত করলে SEO র‍্যাংক ভালো হয়।

৬০ অক্ষরের মধ্যে: Google সাধারণত ৫০-৬০ অক্ষর পর্যন্ত টাইটেল দেখায়, তাই সংক্ষিপ্ত ও তথ্যবহুল রাখা ভালো।

ব্র্যান্ড নাম যুক্ত করা (প্রয়োজনে): বিশ্বাসযোগ্যতা বৃদ্ধির জন্য শেষে ব্র্যান্ড নাম যুক্ত করা যেতে পারে।

উদাহরণস্বরূপ ভালো টাইটেল ট্যাগ

 “ফ্রিল্যান্সিং শেখার সম্পূর্ণ গাইড – ২০২৫ | Freelance BD”

 “ঢাকায় সেরা ১০টি রেস্টুরেন্ট – রিভিউ ও ঠিকানা সহ”

সাধারণ ভুল যা এড়ানো উচিত যেমনঃ

শুধুমাত্র ব্র্যান্ড নাম ব্যবহার: যেমন “Home – MyWebsite”

 অতিরিক্ত কীওয়ার্ড: “SEO, SEO টিপস, SEO গাইড, SEO শিখুন, SEO বাংলা”

 অস্পষ্ট ও সাধারণ টাইটেল: “Page 1”, “Untitled”, “Welcome”

টাইটেল ট্যাগ একটি ছোট অথচ শক্তিশালী অন-পেজ SEO উপাদান। এটি শুধু সার্চ ইঞ্জিনের জন্যই নয়, বরং ভিজিটরদের আকৃষ্ট করতেও গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। সঠিকভাবে কাস্টমাইজ করা টাইটেল ট্যাগ আপনার ওয়েবসাইটের র‍্যাংকিং এবং ভিজিটর সংখ্যা বাড়াতে সাহায্য করবে।

মেটা ডিসক্রিপশন (Meta Description) 

অন-পেজ এসইও (On-Page SEO) হচ্ছে ওয়েবসাইটের অভ্যন্তরীণ বিষয়বস্তু এবং ট্যাগগুলোকে এমনভাবে অপটিমাইজ করা, যাতে সার্চ ইঞ্জিন এবং ব্যবহারকারীরা সহজেই বিষয়বস্তু বুঝতে ও খুঁজে পেতে পারে। এর মধ্যে অন্যতম একটি গুরুত্বপূর্ণ উপাদান হলো মেটা ডিসক্রিপশন (Meta Description)।

মেটা ডিসক্রিপশন কী?

মেটা ডিসক্রিপশন হচ্ছে একটি HTML ট্যাগ যা কোনো ওয়েবপেজের সারাংশ বা সংক্ষিপ্ত বিবরণ তুলে ধরে। এটি মূলত সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজে (SERP) শিরোনামের নিচে প্রদর্শিত হয় এবং ব্যবহারকারীকে জানায় যে পেজটিতে কী ধরনের তথ্য রয়েছে।

উদাহরণ:

<meta name=”description” content=”অন-পেজ SEO কী এবং এটি কিভাবে আপনার ওয়েবসাইট র‍্যাঙ্কিং বাড়াতে সাহায্য করে তা জানুন।”>

কেন মেটা ডিসক্রিপশন গুরুত্বপূর্ণ?

1. সার্চ রেজাল্টে দৃশ্যমানতা বাড়ায়: আকর্ষণীয় মেটা ডিসক্রিপশন ব্যবহারকারীদের ক্লিক করতে উদ্বুদ্ধ করে।

2. CTR (Click Through Rate) বৃদ্ধি পায়: ভালোভাবে লেখা ডিসক্রিপশন আপনার ওয়েবসাইটে ট্রাফিক বাড়াতে সাহায্য করে।

3. প্রাসঙ্গিকতা নিশ্চিত করে: সার্চ কুয়েরির সাথে মিল থাকলে সার্চ ইঞ্জিন এটি হাইলাইট করে দেখায়।

ভালো মেটা ডিসক্রিপশন লেখার টিপস

দৈর্ঘ্য: সাধারণত ১৫০-১৬০ অক্ষরের মধ্যে রাখুন।

মূল কীওয়ার্ড ব্যবহার করুন: আপনার টার্গেট কীওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত করুন।

আকর্ষণীয় ও প্রাসঙ্গিক করুন: ব্যবহারকারী যেন বুঝতে পারে সে পেজে কী পাবে।

ক্রিয়া ব্যবহার করুন: যেমন “জানুন”, “শিখুন”, “দেখুন”, “অর্জন করুন” ইত্যাদি।

যেসব ভুল এড়ানো উচিত

শুধুমাত্র কীওয়ার্ডে ঠাসা ডিসক্রিপশন লেখা।

একাধিক পেজে একই ডিসক্রিপশন ব্যবহার করা।

অতিরিক্ত ছোট বা বড় ডিসক্রিপশন দেওয়া।

ব্যবহারকারীর দৃষ্টিকোণ উপেক্ষা করা।

মেটা ডিসক্রিপশন যদিও সরাসরি গুগল র‍্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর নয়, তবে এটি ব্যবহারকারীর দৃষ্টিকোণ থেকে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। একটি ভালোভাবে লেখা, প্রাসঙ্গিক এবং মনোযোগ আকর্ষণকারী মেটা ডিসক্রিপশন আপনার ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বৃদ্ধি করতে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে। সঠিক কৌশলে ব্যবহার করলে এটি অন-পেজ এসইও-তে উল্লেখযোগ্য ফলাফল এনে দিতে পারে।

হেডিং ট্যাগ (H1, H2, H3…) 

অনপেজ এসইও (On-Page SEO) সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য কনটেন্ট স্ট্রাকচারিং অত্যন্ত জরুরি। এর মধ্যে হেডিং ট্যাগ বা শিরোনাম ট্যাগগুলো (H1 থেকে H6 পর্যন্ত) গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। এই ট্যাগগুলো শুধু পাঠকের জন্য নয়, সার্চ ইঞ্জিনের জন্যও কনটেন্ট বোঝার পথ তৈরি করে দেয়।

হেডিং ট্যাগ কী?

HTML-এ হেডিং ট্যাগ হলো <h1> থেকে <h6> পর্যন্ত মোট ৬টি স্তরের শিরোনাম। এগুলো দ্বারা কনটেন্টের স্তর বা গুরুত্ব নির্দেশ করা হয়। যেমন:

<h1> সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিরোনাম (প্রধান টাইটেল)

<h2> সাব-হেডিং

<h3> সাব-সাব হেডিং

এবং এইভাবে <h6> পর্যন্ত

হেডিং ট্যাগের গুরুত্ব অনপেজ এসইওতে

১. কনটেন্ট স্ট্রাকচার পরিষ্কার হয়

হেডিং ট্যাগ ব্যবহারের মাধ্যমে আপনার কনটেন্ট একটি স্পষ্ট ও সংগঠিত কাঠামো পায়। পাঠক সহজে বিষয়বস্তু বুঝতে পারে।

২. সার্চ ইঞ্জিন বোঝে পেজের বিষয়বস্তু

গুগলের মত সার্চ ইঞ্জিন কনটেন্টের হেডিংগুলো বিশ্লেষণ করে বুঝে নেয়, পেজটি আসলে কী বিষয়ে কথা বলছে। এটা র‍্যাঙ্কিংয়ের ক্ষেত্রে সহায়ক।

৩. কিওয়ার্ড ব্যবহারের জায়গা

প্রয়োজনীয় ও টার্গেট কিওয়ার্ডগুলো হেডিং ট্যাগে ব্যবহার করলে তা সার্চ ইঞ্জিনের জন্য আরও স্পষ্ট হয়।

৪. ইউজার এক্সপেরিয়েন্স উন্নত হয়

সুবিন্যস্ত হেডিং ব্যবহার করলে পাঠক পুরো লেখাটা স্ক্যান করে দ্রুত প্রয়োজনীয় অংশ খুঁজে পেতে পারেন।

সঠিকভাবে হেডিং ট্যাগ ব্যবহারের কিছু টিপস

প্রতিটি পেজে শুধু একটি <h1> ব্যবহার করুন, সাধারণত এটি পেজের প্রধান টাইটেল হয়।

হায়ারার্কি মেনে হেডিং ব্যবহার করুন: যেমন, <h1> এর পরে <h2>, তারপর <h3>।

হেডিংয়ের মধ্যে টার্গেট কিওয়ার্ড যুক্ত করুন তবে অতিরিক্ত কিওয়ার্ড স্টাফিং করবেন না।

হেডিং ট্যাগকে শুধুমাত্র ডিজাইনের জন্য ব্যবহার করবেন না। এগুলোর মূল উদ্দেশ্য হলো কনটেন্ট স্ট্রাকচার বোঝানো।

উদাহরণ:

<h1>অনপেজ এসইও কী?</h1>

<p>অনপেজ এসইও…</p>

<h2>হেডিং ট্যাগের ভূমিকা</h2>

<p>হেডিং ট্যাগ…</p>

<h3>H1 ট্যাগ</h3>

<p>এটি পেজের মূল শিরোনাম…</p>

হেডিং ট্যাগ শুধু ভিজ্যুয়াল শিরোনাম নয়, বরং সার্চ ইঞ্জিন এবং ব্যবহারকারীদের কাছে কনটেন্টকে সঠিকভাবে উপস্থাপন করার একটি কৌশল। সঠিক হেডিং ট্যাগ ব্যবহার অনপেজ এসইওতে বড় ভূমিকা পালন করে এবং সার্চ র‍্যাঙ্কিংয়ে ইতিবাচক প্রভাব ফেলে।

 ইন্টারনাল এবং এক্সটারনাল লিঙ্কিং

অন-পেজ SEO (Search Engine Optimization) সফলভাবে বাস্তবায়নের জন্য লিঙ্কিং অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। মূলত, ইন্টারনাল এবং এক্সটারনাল লিঙ্কিং এর মাধ্যমে গুগল এবং অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন আপনার কনটেন্টকে ভালোভাবে বুঝতে পারে ও ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা বাড়াতে সাহায্য করে।

ইন্টারনাল লিঙ্কিং (Internal Linking)

ইন্টারনাল লিঙ্কিং হলো একই ওয়েবসাইটের এক পেজ থেকে আরেক পেজে লিঙ্ক করা। উদাহরণস্বরূপ, আপনার একটি ব্লগ পোস্ট থেকে আপনি আপনার অন্য একটি সম্পর্কিত পোস্টে পাঠককে পাঠাতে পারেন।

 ইন্টারনাল লিঙ্কিং এর উপকারিতা:

1. কন্টেন্টের মধ্যে সংযোগ তৈরি করে: পাঠক সহজেই সম্পর্কিত টপিকগুলো একসাথে খুঁজে পায়।

2. সার্চ ইঞ্জিনের জন্য পথ তৈরি করে: Google bot সহজে ওয়েবসাইট স্ক্যান করতে পারে এবং পেজগুলো ইনডেক্স করে।

3. Bounce Rate কমায়: পাঠক দীর্ঘ সময় ওয়েবসাইটে থাকে, ফলে সাইটের বিশ্বাসযোগ্যতা বাড়ে।

4. Link Juice বিতরণ করে: গুরুত্বপূর্ণ পেজগুলোতে গুরুত্ব আরোপ করা যায়।

অনপেজ এসইও কিভাবে করবেন  

প্রাসঙ্গিক পেজের মধ্যে লিঙ্ক করুন।

Anchor text অর্থবোধক এবং টার্গেট কিওয়ার্ডসমৃদ্ধ রাখুন।

অতিরিক্ত লিঙ্ক এড়িয়ে চলুন, যাতে ইউজার বিভ্রান্ত না হয়।

এক্সটারনাল লিঙ্কিং (External Linking)

এক্সটারনাল লিঙ্কিং হলো অন্য কোনো ওয়েবসাইটের কনটেন্টে লিঙ্ক যুক্ত করা। এটি সাধারণত রেফারেন্স বা অতিরিক্ত তথ্য প্রদানের জন্য ব্যবহার করা হয়।

এক্সটারনাল লিঙ্কিং এর উপকারিতা:

1. বিশ্বাসযোগ্যতা তৈরি করে: প্রমাণিত এবং অথেনটিক সোর্সে লিঙ্ক করলে গুগল আপনার কনটেন্টকে মানসম্মত হিসেবে বিবেচনা করে।

2. ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতা বৃদ্ধি করে: পাঠক চাইলে অতিরিক্ত তথ্য বা রেফারেন্স পেতে পারে।

3. SEO সিগন্যাল প্রদান করে: গুগল বুঝতে পারে আপনি ভ্যালিড সোর্স ব্যবহার করছেন।

অনপেজ এসইও কিভাবে করবেন 

অথেনটিক এবং প্রাসঙ্গিক সাইটে লিঙ্ক করুন (যেমন Wikipedia, GOV, EDU, নির্ভরযোগ্য নিউজ পোর্টাল ইত্যাদি)।

নতুন ট্যাবে লিঙ্ক ওপেন করুন যেন পাঠক আপনার সাইটেই থাকে।

অতিরিক্ত এক্সটারনাল লিঙ্ক দেওয়া থেকে বিরত থাকুন।

ইন্টারনাল ও এক্সটারনাল লিঙ্কিং কেবল SEO-র জন্য নয়, ব্যবহারকারীর জন্যও সমান গুরুত্বপূর্ণ। সঠিকভাবে এই দুটি লিঙ্কিং প্রয়োগ করলে আপনার ওয়েবসাইটের ট্রাফিক, র‍্যাঙ্কিং এবং ইউজার এনগেজমেন্ট অনেকাংশে বৃদ্ধি পাবে।

ইমেজ অপটিমাইজেশন:

অন-পেজ SEO বলতে আমরা ওয়েবসাইটের অভ্যন্তরীণ যেসব ফ্যাক্টর নিয়ন্ত্রণ করতে পারি তা বুঝি, যা সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাংকিং বাড়াতে সাহায্য করে। এই উপাদানগুলোর মধ্যে “ইমেজ অপটিমাইজেশন” একটি গুরুত্বপূর্ণ ও প্রভাবশালী বিষয়।

ইমেজ অপটিমাইজেশন কী?

ইমেজ অপটিমাইজেশন হলো ওয়েবসাইটে ব্যবহৃত ছবিগুলোকে এমনভাবে প্রক্রিয়াজাত করা যাতে সেগুলোর গুণগত মান বজায় রেখে লোডিং স্পিড দ্রুত হয় এবং সার্চ ইঞ্জিন সহজে বুঝতে পারে ছবির বিষয়বস্তু কী। এটি শুধুমাত্র SEO বৃদ্ধিই নয়, ইউজার এক্সপেরিয়েন্স উন্নত করতেও গুরুত্বপূর্ণ।

কেন ইমেজ অপটিমাইজেশন গুরুত্বপূর্ণ?

ওয়েবসাইটের গতি বাড়ায়: হালকা ইমেজ ব্যবহার করলে ওয়েবসাইট দ্রুত লোড হয়।

ইউজার এক্সপেরিয়েন্স উন্নত করে: দ্রুত লোডিং মানেই ব্যবহারকারী বেশি সময় ওয়েবসাইটে থাকবেন।

সার্চ ইঞ্জিন ইমেজ বুঝতে পারে: Alt text এর মাধ্যমে Google বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন বুঝতে পারে ছবির বিষয়বস্তু কী।

ইমেজ সার্চ থেকে ট্রাফিক আসে: সঠিক অপটিমাইজেশন করলে ছবিগুলো Google Image Search এ র‍্যাংক করতে পারে।

ইমেজ অপটিমাইজেশনের গুরুত্বপূর্ণ কৌশলসমূহ

1. ফাইল নাম অর্থপূর্ণ করুন: যেমন img001.jpg এর বদলে digital-marketing-strategy.jpg ব্যবহার করুন।

2. Alt Text ব্যবহার করুন: এটি ইমেজের জন্য একটি বর্ণনামূলক টেক্সট যা SEO ও অ্যাক্সেসিবিলিটির জন্য প্রয়োজনীয়।

উদাহরণ: <img src=”seo-image.jpg” alt=”অন-পেজ SEO কৌশল”>

3. ছবির সাইজ কমিয়ে আনুন: WebP বা compressed JPG/PNG ব্যবহার করে ছবির সাইজ কমিয়ে ওয়েবসাইট দ্রুত লোড করান।

4. Responsive Image ব্যবহার করুন: যেন সব ডিভাইসেই ইমেজ ঠিকভাবে দেখা যায়।

5. Lazy Loading ব্যবহার করুন: এটি ইমেজ তখনই লোড করে যখন ইউজার স্ক্রল করে ঐ অংশে পৌঁছায়, ফলে লোড টাইম কমে।

6. ক্যাপশন ও আশেপাশের টেক্সট প্রাসঙ্গিক রাখুন: ইমেজের সাথে থাকা লেখা যেন ছবির সাথে সামঞ্জস্যপূর্ণ হয়।

ইমেজ অপটিমাইজেশন শুধুমাত্র একটি টেকনিক্যাল বিষয় নয়, এটি একটি স্ট্র্যাটেজিক অন-পেজ SEO কৌশল। একটি ওয়েবসাইটে সঠিকভাবে ইমেজ অপটিমাইজ করা হলে তা সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাংকিং, ওয়েবসাইট স্পিড এবং ইউজার এক্সপেরিয়েন্স—তিনটিতেই ইতিবাচক প্রভাব ফেলে। তাই এখন থেকেই প্রতিটি ইমেজ অপটিমাইজ করার অভ্যাস গড়ে তুলুন।

URL স্ট্রাকচার:

অন-পেজ SEO এর সফলতার জন্য একটি সুগঠিত এবং পরিষ্কার URL স্ট্রাকচার অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি শুধুমাত্র সার্চ ইঞ্জিনকে নয়, ব্যবহারকারীকেও কনটেন্ট সম্পর্কে স্পষ্ট ধারণা দেয়। ভালো URL গঠন করলে আপনার ওয়েবসাইটের র‍্যাঙ্কিং উন্নত হতে পারে এবং ব্যবহারকারীর অভিজ্ঞতাও বৃদ্ধি পায়।

URL স্ট্রাকচার কী?

URL (Uniform Resource Locator) হল একটি ওয়েবপেজের ঠিকানা। একটি সঠিকভাবে গঠিত URL ব্যবহারকারী এবং সার্চ ইঞ্জিন উভয়ের কাছেই বোধগম্য ও আকর্ষণীয় হয়।

উদাহরণ:

ভালো URL: https://example.com/seo/url-structure

খারাপ URL: https://example.com/page?id=12345

 ভালো URL স্ট্রাকচারের বৈশিষ্ট্য

1. সংক্ষিপ্ত ও স্পষ্ট:

ছোট ও সহজে বোঝা যায় এমন URL ব্যবহার করুন।

2. কীওয়ার্ড অন্তর্ভুক্ত করুন:

টার্গেট কীওয়ার্ড URL এ ব্যবহার করলে সার্চ ইঞ্জিন সহজে বুঝতে পারে পেজটি কী বিষয়ে।

3. হাইফেন ব্যবহার করুন:

একাধিক শব্দের মধ্যে হাইফেন (-) ব্যবহার করুন, আন্ডারস্কোর (_) নয়।

যেমন: on-page-seo-tips

4. স্টপ ওয়ার্ড এড়িয়ে চলুন:

“and”, “or”, “but” ইত্যাদি অপ্রয়োজনীয় শব্দ পরিহার করুন।

5. লোকেশন-ভিত্তিক গঠন:

যদি সাইটে ক্যাটাগরি থাকে, তবে তা যেন লজিক্যাল হায়ারার্কিতে থাকে।

উদাহরণ: example.com/blog/seo/url-structure

 যে ভুলগুলো এড়িয়ে চলা উচিত

দীর্ঘ ও জটিল URL

অপ্রাসঙ্গিক সংখ্যা বা ক্যারেক্টার

ডুপ্লিকেট URL

ক্যাপিটাল লেটার ব্যবহার (সার্ভারে ভিন্নভাবে রিড হতে পারে)

 সার্চ ইঞ্জিনের দৃষ্টিভঙ্গি

Google সহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিন URL গঠনকে একটি র‍্যাঙ্কিং ফ্যাক্টর হিসেবে বিবেচনা করে। একটি পরিষ্কার, কীওয়ার্ডসমৃদ্ধ এবং স্ট্রাকচারড URL পেজের প্রাসঙ্গিকতা বাড়ায় এবং ক্লিক থ্রু রেট (CTR) বাড়াতে সাহায্য করে।

সঠিক URL স্ট্রাকচার শুধুমাত্র SEO-র জন্য নয়, একটি পেশাদার ওয়েবসাইটের প্রাথমিক চিহ্ন। এটি ওয়েবসাইটের ব্যবহারযোগ্যতা ও সার্চ ভিজিবিলিটি বাড়াতে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে। তাই, কনটেন্ট তৈরির সময় যতটা মনোযোগ দেওয়া হয়, ঠিক ততটাই গুরুত্ব দিন URL ডিজাইনের দিকেও।

মোবাইল ফ্রেন্ডলি ডিজাইন:

বর্তমান ডিজিটাল যুগে মোবাইল ডিভাইস ব্যবহারকারীর সংখ্যা দিন দিন বেড়ে চলেছে। মানুষ এখন অধিকাংশ সময়েই স্মার্টফোন বা ট্যাবলেট ব্যবহার করে ইন্টারনেটে ব্রাউজ করে। ফলে একটি ওয়েবসাইট যদি মোবাইল ফ্রেন্ডলি না হয়, তাহলে সেটি ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতায় নেতিবাচক প্রভাব ফেলে এবং SEO পারফরম্যান্সেও ক্ষতি হয়।

মোবাইল ফ্রেন্ডলি ডিজাইন কী?

মোবাইল ফ্রেন্ডলি ডিজাইন হলো এমন একটি ওয়েব ডিজাইন পদ্ধতি যা বিভিন্ন স্ক্রিন সাইজের ডিভাইসে সাইটের কনটেন্ট ও ফিচারগুলোকে স্বাভাবিকভাবে এবং সহজে উপস্থাপন করে। অর্থাৎ, ডেস্কটপ, ট্যাবলেট বা মোবাইল যেকোনো ডিভাইসেই ওয়েবসাইটটি সহজে ব্যবহারযোগ্য এবং পাঠযোগ্য থাকবে।

কেন মোবাইল ফ্রেন্ডলি ডিজাইন গুরুত্বপূর্ণ?

1. গুগল র‍্যাংকিং: গুগল ২০১৫ সাল থেকেই মোবাইল ফ্রেন্ডলিনেসকে র‍্যাংকিং ফ্যাক্টর হিসেবে বিবেচনা করছে। মোবাইল ফ্রেন্ডলি না হলে ওয়েবসাইটের সার্চ র‍্যাংকিং কমে যেতে পারে।

2. ইউজার এক্সপেরিয়েন্স: যদি ওয়েবসাইটটি মোবাইলে ভালভাবে দেখা না যায়, তাহলে ভিজিটররা দ্রুত সাইট ত্যাগ করে দেয়। এটি বাউন্স রেট বাড়িয়ে দেয় যা SEO-র জন্য ক্ষতিকর।

3. লোডিং স্পিড: মোবাইল ফ্রেন্ডলি ডিজাইন সাধারণত হালকা এবং দ্রুত লোড হয়, যা ব্যবহারকারীদের অভিজ্ঞতা উন্নত করে।

4. সোশ্যাল শেয়ারিং: অধিকাংশ সোশ্যাল শেয়ারিং এখন মোবাইল থেকেই হয়। মোবাইল ফ্রেন্ডলি ডিজাইন থাকলে ভিজিটররা সহজেই কনটেন্ট শেয়ার করতে পারে।

কীভাবে একটি মোবাইল ফ্রেন্ডলি ওয়েবসাইট তৈরি করবেন?

রেসপনসিভ ডিজাইন ব্যবহার করুন

HTML ও CSS ব্যবহার করে এমনভাবে সাইট তৈরি করুন যেন সেটি অটোমেটিকভাবে স্ক্রিন সাইজ অনুযায়ী নিজেকে অ্যাডজাস্ট করতে পারে।

পপ-আপ ও অতিরিক্ত স্ক্রল এড়িয়ে চলুন

ছোট স্ক্রিনে অতিরিক্ত পপ-আপ বা স্ক্রল ব্যবহারকারীকে বিরক্ত করতে পারে।

ফন্ট সাইজ ও বাটনের স্পেসিং ঠিক রাখুন

মোবাইলে পড়ার উপযোগী ফন্ট এবং আঙ্গুল দিয়ে ক্লিকযোগ্য যথেষ্ট বড় বাটন ব্যবহার করুন।

গুগল মোবাইল-ফ্রেন্ডলি টেস্ট টুল ব্যবহার করুন

আপনার সাইট মোবাইল ফ্রেন্ডলি কিনা তা যাচাই করতে Google-এর Mobile-Friendly Test Tool ব্যবহার করুন।

মোবাইল ফ্রেন্ডলি ডিজাইন শুধু ব্যবহারকারীর জন্যই নয়, সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাংকিংয়ের জন্যও অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। এটি একটি কার্যকর অন-পেজ SEO কৌশল যা ওয়েবসাইটের ট্রাফিক বাড়াতে ও ইউজার রিটেনশন নিশ্চিত করতে সহায়তা করে।

 পেজ স্পিড অপটিমাইজেশন:

বর্তমান সময়ে একটি ওয়েবসাইটের সফলতা অনেকাংশেই নির্ভর করে তার লোডিং স্পিডের উপর। গুগল সহ অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনগুলো পেজ স্পিডকে র‌্যাংকিং ফ্যাক্টর হিসেবে বিবেচনা করে। তাই পেজ স্পিড অপটিমাইজেশন অন-পেজ এসইও’র গুরুত্বপূর্ণ উপাদানগুলোর মধ্যে অন্যতম।

 পেজ স্পিড অপটিমাইজেশনের গুরুত্ব

1. ইউজার এক্সপেরিয়েন্স উন্নত করে – ধীরগতির ওয়েবসাইটে ভিজিটররা থাকেন না। দ্রুত লোডিং সময় ব্যবহারকারীদের সন্তুষ্ট করে এবং বাউন্স রেট কমায়।

2. সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাংকিংয়ে সাহায্য করে – গুগল ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিডকে একটি র‌্যাংকিং ফ্যাক্টর হিসেবে বিবেচনা করে, বিশেষ করে মোবাইল সার্চে।

3. কনভার্সন রেট বাড়ায় – ফাস্ট লোডিং পেজগুলো ব্যবহারকারীদের সাথে দ্রুত ইন্টার‌্যাক্ট করতে দেয়, যার ফলে বিক্রি বা সাইন-আপের সম্ভাবনা বাড়ে।

 পেজ স্পিড অপটিমাইজেশনের কৌশলসমূহ

১. ইমেজ অপটিমাইজেশন

ছবির সাইজ কমাতে WebP, AVIF ইত্যাদি ফরম্যাট ব্যবহার করুন।

Lazy loading ইমপ্লিমেন্ট করুন যাতে ইউজার স্ক্রল না করা পর্যন্ত ইমেজ লোড না হয়।

২. কোড মিনিফিকেশন

HTML, CSS ও JavaScript ফাইল মিনিফাই করে অপ্রয়োজনীয় স্পেস, কমেন্ট ইত্যাদি সরিয়ে দিন।

৩. ব্রাউজার ক্যাশিং

পুনঃভিজিটকারীদের জন্য পেজ লোড টাইম কমাতে ব্রাউজার ক্যাশিং এনাবল করুন।

৪. রিসোর্স কমপ্রেশন

GZIP বা Brotli কমপ্রেশন ব্যবহার করে ফাইল সাইজ ছোট করুন।

৫. CDN

(Content Delivery Network) ব্যবহার:

গ্লোবাল ইউজারদের জন্য পেজ কনটেন্ট দ্রুত পৌঁছে দিতে CDN ব্যবহার করুন।

৬. রিডাইরেকশন কমানো

অপ্রয়োজনীয় 301/302 রিডাইরেকশন ওয়েবসাইটের লোড টাইম বাড়িয়ে দিতে পারে।

৭. হোস্টিং পারফরম্যান্স উন্নত করা

ভালো মানের ফাস্ট ও রিলায়েবল হোস্টিং বেছে নিন।

পেজ স্পিড টেস্ট করার টুলস

Google PageSpeed Insights

GTmetrix

Pingdom

[Lighthouse (Chrome DevTools)]

পেজ স্পিড অপটিমাইজেশন শুধু সার্চ ইঞ্জিনের জন্য নয়, বরং ব্যবহারকারীদের জন্যও সমানভাবে গুরুত্বপূর্ণ। দ্রুত লোডিং ওয়েবসাইট মানে ভালো ইউজার এক্সপেরিয়েন্স, কম বাউন্স রেট এবং বেশি কনভার্সন। তাই, অন-পেজ এসইও’তে সফলতা পেতে পেজ স্পিড অপটিমাইজেশনকে সর্বোচ্চ গুরুত্ব দেওয়া উচিত।

অনপেজ এসইও শেখা মানে, আপনি গুগলের চোখে নিজের ওয়েবসাইটকে গুরুত্বপূর্ণ করে তুলছেন। এটি এসইও শেখার প্রথম ধাপ, যা ভবিষ্যতের র‍্যাংকিংয়ের ভিত্তি তৈরি করে। এখনই আপনার ওয়েবসাইট বা ব্লগে উপরের চেকলিস্টটি অনুসরণ করে অনপেজ এসইও শুরু করুন।

Read More:

২০ হাজার টাকার মধ্যে সেরা স্মার্টফোন ২০২৫

অনলাইনে টাকা ইনকাম করার উপায় ২০২৫

প্রশ্নোত্তর পর্ব 

টার্গেট কিওয়ার্ড রিসার্চ বলতে বোঝায় এমন কীওয়ার্ড বা শব্দগুচ্ছ খোঁজা যেগুলো ব্যবহারকারীরা গুগল বা অন্যান্য সার্চ ইঞ্জিনে সার্চ করে। এই কীওয়ার্ডগুলো আপনার কনটেন্টের জন্য গাইডলাইন হিসেবে কাজ করে এবং আপনার ওয়েবসাইটের ভিজিটর বাড়াতে সাহায্য করে।

টাইটেল ট্যাগ হচ্ছে HTML কোডের একটি অংশ যা একটি ওয়েব পেজের শিরোনাম নির্দেশ করে। এটি ব্রাউজারের ট্যাব, সার্চ ইঞ্জিন রেজাল্ট পেজ (SERP), এবং সোশ্যাল মিডিয়াতে ওয়েবসাইটের শিরোনাম হিসেবে প্রদর্শিত হয়। উদাহরণস্বরূপ:

<title>বাংলাদেশে অনলাইন শিক্ষা: সম্ভাবনা ও চ্যালেঞ্জ</title>

HTML-এ হেডিং ট্যাগ হলো <h1> থেকে <h6> পর্যন্ত মোট ৬টি স্তরের শিরোনাম। এগুলো দ্বারা কনটেন্টের স্তর বা গুরুত্ব নির্দেশ করা হয়। যেমন:

<h1> সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ শিরোনাম (প্রধান টাইটেল)

<h2> সাব-হেডিং

<h3> সাব-সাব হেডিং

এবং এইভাবে <h6> পর্যন্ত

ইন্টারনাল লিঙ্কিং হলো একই ওয়েবসাইটের এক পেজ থেকে আরেক পেজে লিঙ্ক করা। উদাহরণস্বরূপ, আপনার একটি ব্লগ পোস্ট থেকে আপনি আপনার অন্য একটি সম্পর্কিত পোস্টে পাঠককে পাঠাতে পারেন।

ইমেজ অপটিমাইজেশন হলো ওয়েবসাইটে ব্যবহৃত ছবিগুলোকে এমনভাবে প্রক্রিয়াজাত করা যাতে সেগুলোর গুণগত মান বজায় রেখে লোডিং স্পিড দ্রুত হয় এবং সার্চ ইঞ্জিন সহজে বুঝতে পারে ছবির বিষয়বস্তু কী। এটি শুধুমাত্র SEO বৃদ্ধিই নয়, ইউজার এক্সপেরিয়েন্স উন্নত করতেও গুরুত্বপূর্ণ।

পেজ স্পিড অপটিমাইজেশনের গুরুত্ব:

1. ইউজার এক্সপেরিয়েন্স উন্নত করে – ধীরগতির ওয়েবসাইটে ভিজিটররা থাকেন না। দ্রুত লোডিং সময় ব্যবহারকারীদের সন্তুষ্ট করে এবং বাউন্স রেট কমায়।

2. সার্চ ইঞ্জিন র‍্যাংকিংয়ে সাহায্য করে – গুগল ওয়েবসাইটের লোডিং স্পিডকে একটি র‌্যাংকিং ফ্যাক্টর হিসেবে বিবেচনা করে, বিশেষ করে মোবাইল সার্চে।

পোস্টটি শেয়ার করুন

Leave a Comment

Your email address will not be published. Required fields are marked *

Scroll to Top